ণত্ব ও ষ-ত্ব বিধান
# ণত্ব বিধান কাকে বলে? ণত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখ।
উত্তর: যে রীতি অনুসারে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে মূর্ধন্য (ণ) হয়, তাকে ণত্ব বিধান বলে। অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে ‘ণ’-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান।
i. তৎসম শব্দের বানানে ঋ, র এবং ষ এর পরে ‘ণ’ ব্যবহৃত হয়। যেমন— ঋণ, মরণ, তৃণ, ক্ষীণ, বর্ষণ।
ii. ঋ, র,ষ, রেফ , ঋ-কার( ৃ), র-ফলা ( ্র )- এর পর যদি ক-বর্গীয় বর্ণ, প-বর্গীয় বর্ণ, এবং য, য়, হ, ং —এই বর্ণের যেকোনো এক বা একাধিক বর্ণ থাকে, তবে তার পরেও মূর্ধন্য ‘ণ’ হবে। যেমন— অপরাহ্ণ, শ্রাবণ, গ্রহণ, দ্রবণ।
iii. যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের ক্ষেত্রে ট-বর্গীয় বর্ণের পূর্বে ‘ণ’ বসে। যেমন—কণ্টক, লুণ্ঠন, কণ্ঠ, খণ্ড, কুণ্ড।
iv. প্র, পরি, নির এই তিনটি উপসর্গের পর সাধারণত ‘ণ’ ব্যবহৃত হয়। যেমন—প্রণয়, প্রণাম, পরিণয়, নির্ণয়।,
v. নার, পার, রাম, রবীন্দ্র, চন্দ্র, উত্তর ইত্যাদি শব্দের পর ‘অয়ন’ বা ‘আয়ন’ থাকলে তার পরের ‘ন’ ধ্বনিটি মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়। যেমন—নারায়ণ, পরায়ণ, রামায়ণ, রবীন্দ্রায়ণ, চন্দ্রায়ণ, উত্তরায়ণ ইত্যাদি।
#ষ-ত্ব বিধান কী? ষ-ত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখ।
উত্তর : যে রীতি অনুসারে তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য ষ ব্যবহৃত হয়, তাকে ষ-ত্ব বিধান বলে। অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে ‘ষ’-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ষত্ব বিধান।
নিচে ষ-ত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম উল্লেখ করা হলো :
i. তৎসম শব্দের বানানে ঋ বা ঋ-কার ( ৃ ), র, ও ক –এর পর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন—ঋষি, কৃষি, বর্ষা।
ii. অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনির পরে স থাকলে তা ষ হয়। যেমন—ভবিষ্যৎ, বিষ, ঊষা ইত্যাদি।
iii. ট, ঠ এই দুটি মূর্ধন্য বর্ণের পূর্বে যুক্ত অবস্থায় সর্বদা ‘ষ’ হয়। যেমন—কষ্ট, নষ্ট, দুষ্ট, কাষ্ঠ, ওষ্ঠ, শ্রেষ্ঠ।
iv. ই-কারান্ত ও উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতকগুলো ধাতুতে ‘ষ’ হয়। যেমন— অনুষঙ্গ, অভিষেক, সুষম।
v. সাৎ প্রত্যয়ান্ত শব্দে ষত্ব বিধান হয় না। যেমন– অগ্নিসাৎ, ধূলিসাৎ।
এ এস এম সাইফুল্লাহ বায়েজীদ
সহকারী অধ্যাপক,
বিএএফ শাহীন কলেজ চট্টগ্রাম।
আরও দেখুন> বানানে ই-কার ব্যবহারের নিয়ম